গান রেকর্ড করতে গিয়ে স্টুডিও থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল আশা ও কিশোর কুমারকে, আসল কারণ শুনলে চোখে আসবে জল









নিজস্ব প্রতিবেদন: বলিউডের গানের জগতে কিশোর কুমার ও আশা ভোঁসলের জুটি ছিল অন্যতম। বহু গান’কে অমরত্ব দিয়েছেন তারা। দুজনের কাছেই কণ্ঠস্বর ছিল ঈশ্বরপ্রদত্ত। সবথেকে আশ্চর্য ব্যাপার তাদের কাছে কিন্তু প্রথাগত সংগীত শিক্ষার তালিম ছিল না। কিন্তু তাদের কন্ঠের গান শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে যেত।
তবে একবার চল্লিশের দশকে একটি গান রেকর্ড করার সময় সাউন্ড রেকরডিস্ট মাঝপথে গান রেকর্ড থামিয়ে কিশোর জি এবং আশা জিকে বের করে দিয়েছিলেন স্টুডিও রুম থেকে। সেই গানটি তিনি অন্য শিল্পীদের দিয়ে রেকর্ড করিয়েছিলেন। এই চূড়ান্ত অপমান আজীবন ভুলতে পারেননি তারা। আজকের এই বিশেষ প্রতিবেদনে আমরা আপনাদের সাথে এই অজানা কথা নিয়েই আলোচনা করতে চলেছি।




১৯৫০ সালে মুক্তি পেয়েছিল রাজ কাপুর এবং নার্গিস অভিনীত সুপার হিট ছবি জান পেহচান। ১৯৫০ সালে ছবিটি মুক্তি পেলেও গানগুলো রেকর্ড করা হয়েছিল ১৯৪৮ সালে। ছবিতে একটি গান ছিল ‘আরমান মেরে দিলকি লগন তেরে লিয়ে হ্যা’। গানটির সংগীত পরিচালক ছিলেন খেমচন্দ প্রকাশ। তিনি গানটি কিশোর কুমার এবং আশা ভোঁসলেকে দিয়ে গাওয়াতে চেয়েছিলেন। তাদেরকে প্রস্তাব দেওয়া মাত্রই তারা রাজিও হয়ে গিয়েছিলেন। রেকর্ডিং এর দিন সঠিক সময়ে তারা দুজনেই স্টুডিওতে উপস্থিত হন। কিন্তু রেকর্ড শুরু না হতেই ঝামেলা বেধে যায়। কিশোরজি এবং আশা জি যখন গানটি গাইছেন তখন আচমকায় তাদের থামতে বলেন সাউন্ড রেকরডিস্ট রবিন চ্যাটার্জী।
তিনিই ছিলেন এই ছবির প্রডিউসার। আসলে কিশোর কুমার এবং আশা ভোঁসলের কন্ঠস্বর তার একদমই পছন্দ হয়নি। আচমকাই রবিন চ্যাটার্জী বলে ওঠেন দুজনের একজনও ভালো নন। কারণ গান তার পছন্দ হয়নি। এদেরকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে দিয়ে গান করানো হোক। রবিন চ্যাটার্জী যেহেতু ছবির প্রডিউসার ছিলেন তাই তার কথা ফেলতে পারেননি সংগীত পরিচালক খেমচন্দ প্রকাশ। স্টুডিও থেকে বের করে দেওয়া হয় দুই সংগীতশিল্পীকে। তখন তারা দুজনেই ছিলেন গানের জগতে নতুন। দুজনেই স্ট্রাগল করছেন নাম আর প্রতিষ্ঠা পাওয়ার জন্য। তাই আর সেদিন কিছুই বলতে পারেননি কেউ।




চোখে জল আর বুক ভরা অপমান নিয়ে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন দুজনেই। পরে এই গানটি গাবানো হয়েছিল গীতা দত্ত এবং তালাত মাহমুদকে দিয়ে। এই ঘটনার বহু বছর পর একবার গান রেকর্ডিং এর সূত্রে কিশোর কুমার আর আশা ভোঁসলের মুখোমুখি হয়েছিলেন রবিন চ্যাটার্জী। মুখোমুখি হতেই পুরনো দিনের সেই অপমানের কথা মনে পড়ে যায় কিশোর কুমারের।
তিনি বলে উঠেছিলেন, “মনে আছে একদিন আমাদেরকেই স্টুডিও থেকে বের করে দিয়েছিলেন। আর আজ দেখুন আমরা টপ গায়ক গায়িকাদের পর্যায়ে চলে এসেছি”। যদিও এরপর আর কিশোরকুমারকে কিছুই বলতে দেননি আশাজি। পুরনো কথা বাদ দিতে বলেন তিনি। ব্যস এই পর্যন্তই ছিল আমাদের আজকের এই প্রতিবেদন। জনপ্রিয় এই কিংবদন্তি দুই শিল্পীর অজানা কথা আপনাদের কেমন লাগলো তা জানাতে অবশ্যই ভুলবেন না।











